বৃহঃস্পতিবার, ১লা মে ২০২৫, ১৭ই বৈশাখ ১৪৩২ | ই-পেপার
ব্রেকিং নিউজ:
  • সারাদেশে উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আগ্রহী হলে আপনার সিভি ই-মেইল করতে পারেন। ই-মেইল nagorikdesk@gmail.com
সংবাদ শিরোনাম:
  • বিমান বাহিনীর অনুশীলন পর্যবেক্ষণ প্রধান উপদেষ্টার
  • যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক নিয়ে যা বললেন অর্থ উপদেষ্টা
  • ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ
  • সরকারের প্রচেষ্টা হচ্ছে মানবাধিকার ও শ্রমিক অধিকার সমুন্নত রাখা
  • সেনাবাহিনীর দক্ষতা ও স্বচ্ছতার প্রশংসা করলেন প্রধান উপদেষ্টা
  • রমনা বটমূলে বোমা হামলা মামলার হাইকোর্টের রায় ৮ মে
  • বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের ঘর বিতরণ করবেন প্রধান উপদেষ্টা
  • সরকারি চাকরিজীবীদের টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেডপ্রাপ্তরাও উচ্চতর গ্রেড পাবেন
  • ঢাকার বাতাস আজ খুব অস্বাস্থ্যকর
  • স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের পর কারিগরি শিক্ষা হবে মূল বিষয়

ইবিতে সাংবাদিককে মারধর, নেপথ্যে যত অভিযোগ

ইবি প্রতিনিধি

প্রকাশিত:
৩০ এপ্রিল ২০২৫, ১৮:০৯

ছাত্রলীগের কার্যালয় ভাঙ্গার পর জুলাই আন্দোনকারীদের ‘দুবৃত্ত’ আখ্যা দেওয়ার অভিযোগে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ক্যাম্পাস সাংবাদিক ওয়াসিফ আল আবরারকে মারধর করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে কলেজে থাকা অবস্থায় ছাত্রলীগ সংশ্লিষ্টতার অভিযোগও তোলা হয়।

আবরার বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিউনিকেশন এন্ড মাল্টিমিডিয়া জার্নালিজম বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। বুধবার (৩০ এপ্রিল) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ আজিজুর রহমান আবাসিক হলে এ ঘটনা ঘটে। পরবর্তীতে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রে নেওয়া হয়। রাতে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার পর নিরাপত্তার স্বার্থ বিবেচনায় তাকে কুষ্টিয়া মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে।

হল সূত্রে জানা গেছে, আবরার বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ আজিজুর রহমান হলে অবৈধভাবে দীর্ঘদীন ধরে অবস্থান করছিলেন। শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন সময় ছাত্রলীগ সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ প্রভোস্টকে দেখিয়ে তাকে নামানোর দাবি জানান। শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে প্রভোস্ট তাকে হল থেকে নামিয়ে দেয়। কিন্তু সম্প্রতি কয়েকদিন ধরে আবারও ওই হলে অবস্থান করতে শুরু করলে শিক্ষার্থীরা ব্যাপারটা স্বাভাবিকভাবে নেননি। পরে রাত ১২ টা ২০ মিনিট নাগাদ তাকে হল থেকে নেমে যেতে বলা হলে এক পক্ষ প্রতিরোধ করায় শিক্ষার্থীদের দু'পক্ষের মধ্যে ঠেলাঠেলি সহ শুরু হয় গণ্ডগোল।

ঘটনাস্থলে একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, ‘প্রভোস্ট হল থেকে বের হয়ে যেতে বললেও আবরার হল থেকে বের হননি। কতিপয় সমন্বয়ক ও নেতা তাকে শেল্টার দেয়ায় প্রভোস্ট স্যারও অসহায় হয়ে গিয়েছিলো। তাই আমরা তাকে বলতে গেছিলাম যে, সে যেন হল ছেড়ে দেয়।’

শিক্ষার্থীদের দাবি, ‘ওয়াসিফ আল আবরার কলেজে থাকা অবস্থায় পাবনার বেড়া উপজেলা ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী ছিল। জুলাই আন্দোলনেও তার ভূমিকা বেশ বিতর্কিত ছিল। তার প্রোফাইলে জুলাই আন্দোলন কেন্দ্রিক উল্লেখযোগ্য কোনো নিউজও শেয়ার করতে দেখা যায়নি। চারদিকে যখন আন্দোলনকারীরা একে একে শহিদ হচ্ছিল তখন সে হাসিমাখা ছবি পোস্ট আপলোড দেয়।’

এদিকে গত ৩ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের ভিতরে থাকা শাখা ছাত্রলীগের অফিস ভাংচুর চালায় আন্দোলনকারীরা। এতে একটি সংবাদে আন্দোলনকারীদের ‘দুর্বৃত্ত’ বলে আখ্যা দেন তিনি। এছাড়াও ৫ আগস্টের পরেও বিভিন্ন বিতর্কিত কার্যক্রমে তাকে দেখা যায়। বন্যা কবলিত মানুষের জন্য বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জমানো জামাকাপড় ‘হরিলুট’ বলে প্রচার করছে বলেও জানা যায়।

এ বিষয়ে মারধরের শিকার ওয়াসিফ আল আবরার বলেন, “আমাকে ৭/৮ জন লোক গিয়ে বলে ‘২ মিনিট সময় হল থেকে বের হবি।’ আমি তখন জিনিসপত্র নিচ্ছিলাম। আমি বের হয়ে যাচ্ছিলাম। আমাকে তারা বলে ‘আপনি হলুদ সাংবাদিক পরে আবার ঝামেলা করবেন’ বলে আমার ফোন নেওয়ার চেষ্টা করে। পরে ৮/৯ জন মিলে রুমের লাইট বন্ধ করে আমাকে মারধর করে।”

ইবি মেডিকেল (উপপ্রধান মেডিকেল অফিসার) ডাক্তার মো. পারভেজ হাসান জানান, আশা করা যায় তেমন গুরতর কিছু হয়নি। মেডিকেলে নিয়ে আসার পর শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল। পরে ১ ঘণ্টার মত নেবুলাইজার দিয়ে রাখা হয়। অতপর অবস্থা আগের থেকে উন্নত হলে রাত ২ টার দিকে তাকে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে।

এদিকে মেডিকেলে রোগীর সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে রিপোর্টার্স ইউনিটির দপ্তর সম্পাদক সাকিব আসলামকে বাধা দেয় এবং হেনস্তার শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে ঘটনাস্থলে উপস্থিত কতিপয় সমন্বয়কের বিরুদ্ধে।

পরে রাত দেড়টার দিকে শাখা সহ-সমন্বয়ক সহ শিক্ষার্থীদের দুই গ্রুপ উপাচার্যের সামনে স্লোগান দিতে দেখা যায়। মারমুখী অবস্থান সৃষ্টি হলে প্রক্টরিয়াল বডি ও ট্রেজারার অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম উপস্থিত হন। দুই পক্ষকে নিয়ে রাতভর আলোচনায় বসেন প্রক্টরিয়াল বডি।

শাহ আজিজুর রহমান হল প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. এটিএম মিজানুর রহমান জানান, ‘ওই ছেলেটা দীর্ঘদিন ধরে সাংবাদিক পরিচয়ে হলে ছিল। হলে বৈধ সিট ছিল না৷ তাই লিগালি সময় নিয়ে বের করে দেয়া হয়েছিল। আবারও কেন হলে অবস্থান করলো এটা তদন্ত করে দেখা যাবে। এর আগেও আমি তার রুমমেটকে কল দিয়ে রিকুয়েস্ট করেছিলাম যে, সে যেন হলে অবস্থান না নেন।’

সবার বক্তব্য শুনে সকাল ৮ টায় প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজামান বলেন, ‘দুই পক্ষের কথা শুনেছি। সমন্বয়কদের মিলিয়ে দেয়া হয়েছে। দু'টি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে- একটা হল কর্তৃপক্ষ এবং আরেকটা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।’


মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর