শনিবার, ১৪ই জুন ২০২৫, ৩১শে জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ | ই-পেপার
ব্রেকিং নিউজ:
  • সারাদেশে উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আগ্রহী হলে আপনার সিভি ই-মেইল করতে পারেন। ই-মেইল nagorikdesk@gmail.com
সংবাদ শিরোনাম:
  • জুলাই সনদ নিয়ে ১৭ জুন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বসছে কমিশন
  • মামলার চাপ কমাতে আপস-মধ্যস্থতা বাধ্যতামূলক করা গুরুত্বপূর্ণ
  • দেশজুড়ে অভিযানে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার ১৪৫২ জন
  • মামলা দ্রুত নিষ্পত্তিতে সিভিল প্রসিডিউর কোড সংশোধন হচ্ছে
  • সিলেটের কোনো পাথর কোয়ারি আর লিজ দেওয়া হবে না
  • এপিবিএন পাবে ভারি অস্ত্র, পুলিশের কাছে থাকবে না মারণাস্ত্র
  • ঈদের ১০ দিনের ছুটি শেষে রোববার খুলছে অফিস-আদালত
  • গরম নিয়ে সুখবর দিল আবহাওয়া অফিস
  • দেশে ফিরেছেন প্রধান উপদেষ্টা
  • শোক জানিয়ে নরেন্দ্র মোদীকে বার্তা ড. ইউনূসের

ছোট গল্প

একাকিত্ব

আব্দুল হালিম

প্রকাশিত:
২৩ নভেম্বর ২০২৪, ১৬:০৭

আমি রাশেদ। সবাই আমাকে রাশেদ সাহেব নামে চেনে। বয়স আশির কাছাকাছি। অল্প কিছুদিন আগে চাকুরি থেকে অবসর নিয়েছি।চাকুরি জীবনে একজন শিক্ষক ছিলাম । আমার অনেক ছাত্র বিসিএস ক্যাডার হয়ে বিভিন্ন দপ্তরে চাকরি করে। অবসরের পর ছাদ বাগানে কাজ করে দিন কাটছিল। আমার তিন ছেলে এক মেয়ে । দুই ছেলে আমেরিকার নিউ ইয়ার্ক শহরে চাকরি করে । তারা উভয়েই সেখানে স্থায়ী হয়েছে। আমাকে সেখানে যেতে বললেও দেশের মায়ায় যাই নি। আমার ছোট ছেলে ঢাকায় রিয়েল ইস্টেটের ব্যবসা করে। ছেলে - মেয়ে নিয়ে একটি ফ্লাটে থাকে । আমি গ্রামের একটি দালান বাড়িতে আমার স্ত্রীকে নিয়ে বাস করি। সবাইকে নিয়ে আমি খুব সুখে ছিলাম কিন্তু হঠাৎ এলো আমার দুঃখের দিন। সেইদিন যেন কারো জীবনে না আসে । আমার স্ত্রী পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে আামায় ছেড়ে চলে গেল। সেই শোকে একদিন আমি ব্রেইন স্ট্রোক করলাম। আমার পাশের বাড়ির ভাতিজা আমাকে হাসপাতালে ভর্তি করেছিল।

 

কিছুদিন পর হাসপাতাল থেকে রিলিজ দিল। আমার ছোট ছেলে এসে আমাকে ঢাকায় নিয়ে গেল । চিকিৎসার কমতি রাখেনি আমার ছোট ছেলে । আমার ছেলের বউ আমার খাবার দাবারের ব্যবস্থা করে । কিন্তু দুঃখের বিষয় আমি বিছানাতেই পেশাব - পায়খানা করি। একজন নার্স রেখেছে সেগুলো পরিস্কার করার জন্য। সে এসে নোংরা গুলো পরিষ্কার করে দেয় ,খাবার খাইয়ে এবং ঔষুধ খাইয়ে দেয়। তারপর সে চলে যায়। আমার নাতি -নাতনিরা লেখা পড়ায় ব্যস্ত থাকায় আমার কাছে আসে না। ছেলের বউ সংসারের কাজ কর্ম নিয়ে ব্যস্ত থাকায় আমার কাছে আসতে পারে না। ছেলে ত সেই সকালে যায় আর ফিরে রাত বারোটায় । আমার সাথে তার দেখা মেলায় ভার। বিদেশ থেকে ছেলেরা মাঝে মাঝে ফোন দেয়। খবর নেয় আমি কেমন আছি।

 

কিন্তু এখন আমার খুব একা একা লাগে। সারাদিন শুয়ে শুয়ে ঘরের দেয়াল দেখা , ফ্যান ঘোরার শব্দ শোনা, মাঝে মাঝে নার্সের হাতে ভর করে জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে থাকা । ছুটে চলা মানুষগুলো দেখে মনটা হুহু করে কেঁদে উঠে । মনে মনে বলতে থাকি, হাজারো মানুষ চারপাশে কিন্তু আমার সাথে কথা বলার সময় কারো নাই,আমার খোজ খবর নেওয়ার কেউ নাই, আমার সাথে বসে গল্প করার মত কেউ নাই । আমি আজ একা হয়ে গেছি শুধু অপেক্ষায়♥♥ রয়েছি মৃত্যু আসবে কখন। এই একাকিত্ব জীবনের কান্না দেখার মত কেউ নেই আমার জীবনে । আমি বড্ড একা হে পৃথিবী আমাকে সঙ্গ দাও । আমি বড্ড একা।

 


মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর