বুধবার, ৩০শে এপ্রিল ২০২৫, ১৭ই বৈশাখ ১৪৩২ | ই-পেপার
ব্রেকিং নিউজ:
  • সারাদেশে উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আগ্রহী হলে আপনার সিভি ই-মেইল করতে পারেন। ই-মেইল nagorikdesk@gmail.com
সংবাদ শিরোনাম:
  • যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক নিয়ে যা বললেন অর্থ উপদেষ্টা
  • ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ
  • সরকারের প্রচেষ্টা হচ্ছে মানবাধিকার ও শ্রমিক অধিকার সমুন্নত রাখা
  • সেনাবাহিনীর দক্ষতা ও স্বচ্ছতার প্রশংসা করলেন প্রধান উপদেষ্টা
  • রমনা বটমূলে বোমা হামলা মামলার হাইকোর্টের রায় ৮ মে
  • বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের ঘর বিতরণ করবেন প্রধান উপদেষ্টা
  • সরকারি চাকরিজীবীদের টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেডপ্রাপ্তরাও উচ্চতর গ্রেড পাবেন
  • ঢাকার বাতাস আজ খুব অস্বাস্থ্যকর
  • স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের পর কারিগরি শিক্ষা হবে মূল বিষয়
  • মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে পুলিশের প্রতি প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান

‘পানির মধ্যে খুব কষ্টে আছি’

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি

প্রকাশিত:
৩১ আগষ্ট ২০২৪, ১৮:১৩

‘ঘরের মধ্যে ও উঠানজুড়ে থৈ থৈ পানি। এর মধ্যে আমরা দুইজন (বৃদ্ধা দম্পতি) খুব কষ্টে আছি।

এত কষ্টে আছি যে, তা বলে বোঝাতে পারব না। আগেও বন্যার কবলে পড়েছি, কিন্তু এবারের মতো দুর্দশাগ্রস্ত হইনি’।

বন্যার পানিতে দাঁড়িয়ে দুর্দশার কথাগুলো বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন সত্তরোর্ধ্ব মহিন উদ্দিন। তিনি লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার দিঘলী ইউনিয়নের পশ্চিম জামিরতলী গ্রামের বাসিন্দা।

বৃদ্ধ মহিন উদ্দিন চোখে কম দেখেন। অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। আয়-রোজগার নেই। স্ত্রী রোকসানা বেগমকে নিয়ে যে ঘরে থাকেন, সেটির মধ্যে হাঁটুপানি।

তিনি বলেন, চোখে কম দেখি। আমি অসুস্থ মানুষ। কাজ করতে পারি না। এক ছেলে, তার আয়ের ওপর নির্ভরশীল। ত্রাণ হিসেবে কিছু পেলে রান্না করি গ্যাসের সিলিন্ডারের মধ্যে। তা নাহলে শুকনো খাবার খাই।

দিঘলীর পশ্চিম জামিরতলী গ্রামের কৃষক মো. সুমন বলেন, খাওয়ার কষ্ট। রান্নার কষ্ট। ঘরে পানি। কাঠের পাটাতন বসিয়ে নিয়েছি। চারটি ইটের স্তূপ দিয়ে উঁচু করে দিয়েছি। পরিবারের নয়জন সদস্য কোনোভাবে থাকি।

কৃষক সুমন বলেন, রান্নাঘরে এক হাঁটুপানি। চাল-ডাল পেলে রান্না করতেও ভোগান্তি পোহাতে হয়। একটা টিন কেটে নিয়েছি, তাতে কোনোভাবে রান্না চলে। বেশির ভাগ সময় ত্রাণ হিসেবে শুকনো খাবার পাই। চাল-ডাল জোগাড় করতে পারলে রান্না হয়। পয়োনিষ্কাশন সমস্যায় পুরুষের চেয়ে নারীরা খুব কষ্টে আছে। তাই ভয়ে কম খাবার খেতে হচ্ছে বাড়ির নারীদের।

একই এলাকার শাহজাহান বলেন, অনুদান আসে, হালকা-পাতলা কিছু পাই। তা দিয়ে হয় না। নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করি। এখন তো কাজ নেই, চলতে কষ্ট হয়।

বন্যার্ত এলাকার বাসিন্দা আবু তাহের বলেন, বাড়িতে কোমর পানি। ঘরে আধা ফুট পানি। নিজের বাড়ি ছেড়ে যেতে খারাপ লাগে। আশ্রয়কেন্দ্রে উঠিনি। খাটের ওপর খাট রেখে উঁচু করে দিয়েছি। পানির কারণে ঘরের অনেক মালামাল নষ্ট হয়েছে। কিছু নেই। গরু আছে, রাস্তার পাশে রেখেছি। পয়োনিষ্কাশনের সমস্যা তো হচ্ছেই।

তিনি বলেন, গ্যাসের চুলায় রান্না করছি। কিন্তু দুইদিন গ্যাস ছিল না৷ তাই ওই দুই দিন খাইতে পারিনি। না খেয়ে ছিলাম। গ্যাস রিফিল করে আনতে অনেক কষ্ট হয়। সড়কে চলাচলের ব্যবস্থা নেই। কিছু করার নাই। আল্লাহ যেভাবে রাখে, সেভাবে থাকতে হবে।

লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার বন্যাকবলতি এলাকার মধ্যে সবচেয়ে বেশি পানির উচ্চতা লক্ষ্য করা গেছে দিঘলী ইউনিয়নের পূর্ব-পশ্চিম ও উত্তরাংশে। এসব অঞ্চলের পানিবন্দি বাসিন্দারা এখন নিদারুণ কষ্টের মধ্যে দিনযাপন করছে। বেশিরভাগ লোকজন ঘরের মায়া ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেনি। ঘরেই অবস্থান নিয়েছেন তারা। লক্ষ্মীপুরের পানি এখন কমতে শুরু করেছে। তবে যে হিসেবে বেড়েছে, ওইভাবে পানি কমছে না।

লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নাহিদ উজ জামান বলেন, পানি নামতে শুরু করেছে। শনিবার (৩১ আগস্ট) ১০ সেন্টিমিটার বন্যার পানি কমেছে।


মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর